এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের সিন্ডিকেট অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনায় অবশেষে টনক নড়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের উর্ধ্বতন প্রশাসনের। অনিয়মের সচিত্র প্রতিবেদন নিয়ে “চকরিয়া নিউজ” এ খবর প্রকাশের পর অবশেষে অনিয়মের জড়িত সেই উপসহকারি প্রকৌশলী ডিএম সাদিউজ্জামানকে চকরিয়া থেকে বদলি করা হয়েছে। সোমবার ২ ফেব্র“য়ারী বিকালে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গনী। তিনি বলেন, উপসহকারি প্রকৌশলী সাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে যেহেতু বিভিন্নধরণের অভিযোগ উঠেছে, তাই বিষয়ের আলোকে তাকে কক্সবাজারের রামু বিদ্যুৎ বিভাগে বদলি করা হয়েছে। অপরদিকে রামু বিদ্যুৎ বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী মেহেদী হাসানকে চকরিয়া পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত: সহকারি প্রকৌশলী ডিএম সাইদুজ্জামান ইতোপুর্বে চকরিয়া অফিসে তিনবছর চাকুরী করলেও দুর্নীতির অভিযোগে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে কুতুবদিয়া বদলি করে। পরে সেখান থেকে অন্যত্র চলে গিয়ে ফের দুইবছর আগে আবারও টাকার বিনিময়ে চকরিয়া উপজেলায় পোস্টিং নেন তিনি।
মুলত তিনি যোগদানের পর থেকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন চকরিয়া বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগকে। কিছুদিন আগে আবাসিক প্রকৌশলী পদে গীতি বসু বড়ুয়া নামের একজন কর্মকর্তা যোগদান করলেও দাপটের সঙ্গে অফিসে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন সাইদুজ্জামান। তিনি চকরিয়া বিদ্যুত অফিসে নতুন মিটার সংযোগের ক্ষেত্রে নতুন প্রথা চালু করেছেন। কেউ নতুন মিটার নিতে গেলে তাকে অফিসের সিন্ডিকেট চক্রের চালু করা বিশেষ ফান্ডে ১২শত টাকা জমা দেয়ার জন্য বাধ্য করছেন। কোন গ্রাহক অফিসের বিশেষ ফান্ডে (ফান্ডের রক্ষক আবদুল গনীর হাতে) ওই টাকা জমা না দিলে তাকে সহজে মিটার সংযোগ দেয়া হচ্ছেনা, উল্টো ওই গ্রাহককে হয়রাণির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক।
সহকারি প্রকৌশলী ডিএম সাদিজ্জামানের দাপটে এভাবে সিন্ডিকেট অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে চকরিয়া বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। পাশাপাশি সাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় শতভাগ বিদ্যুতায়নে খুটি স্থাপন ও সংযোগ লাইন চালু এবং মিটার বিতরণে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় ছাড়াও হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুইমাস আগে চকরিয়া উপজেলা এবং পৌরসভার এলাকার একাধিক গ্রাহক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিদ্যুৎ বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিন অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী (বিতরণ) কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ তুলেছেন, ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর উপসহকারি প্রকৌশলী ডিএম সাইদুজ্জামানের তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হলেও অদৃশ্য কারণে বিদ্যুৎ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোন ধরণের প্রদক্ষেপ নেয়নি। এ অবস্থার কারণে অভিযুক্ত সহকারি প্রকৌশলী ডিএম সাইদুজ্জামান এখনও বহাল তবিয়তে থেকে বিদ্যুৎ সেবাখাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চকরিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়ে গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারী মাসে তিনি লাগামহীনভাবে অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।
পাঠকের মতামত: